পুষ্প
নয় বছর তো কেটে গেলো
কেমন আছো তুমি?
এখনো সেই আগের জেদ আছে?
নাকি খানিকটা কমেছে?
লম্বা একটা সময় পরে,
তোমার ঠিকানায় চিঠি দিলাম।
জানিনা, এ পত্রের ঠিকানায় তুমি আছো কিনা।
বিহারী লেনের ডানপাশের গলি,
তার হাতে গুনা পাঁচটি বিল্ডিং পর তোমার ঠিকানা।
কালচে শেওলা জমা দোতলা বাড়ি,
ছাদ বেয়ে ঝুলে থাকা অপরিচিত লতা,
আর দখিনেয় খোলা বারান্দা।
ছাদে যখন দুপুরবেলা তুমি শাড়ি শুকোতে আসতে,
আমি লজ্জাহীন হয়ে রেজাউল এর দোকানের
দেয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকতাম।
তুমি আজ কি শাড়ি পড়লে? সে প্রশ্নের উত্তর জানবো বলে।
অনেক অনেকদিন পরে জানলাম-' তোমার নাম পুষ্প'
সেদিন থেকে তোমার প্রতি আমার কেমন যেন অনুভূতির আবাদ বেড়ে গেল।
পুষ্প,
তোমার এই নাম আমি কতটা সুন্দর করে ডাকতে পারবো?
রাজবাড়ীর ওপারের দেয়ালের পেছনটাতে বসে
আমি সারাটা বিকেল তোমার নাম জপে যেতাম।
পুষ্প....পুষ্প....পুষ্প...
এত করে চেয়েও,
না, আমি তোমাকে কখনোই ডাকতে পারিনি।
রেজাউলের ফাদে পড়ে বাজি পেতে বসি,
সে প্রথমবার তোমার সামনে যাওয়ার সাহস।
যখন তোমার চোখে চোখ পড়লো,
তখন আমার সর্বাঙ্গ স্নায়ু অচেতনতায় ভুগছিলো।
সেদিনের পর থেকে তোমার সামনে যাব ভেবে ও যাওয়া হলোনা আর
আমি চলে এলাম অন্য নগরে।
সপ্তাহের শেষের দিনটা এখানকার স্টেশনে অপেক্ষা করেই কাটাতাম।
বিমল সেই একদিন শহরে আসতো,
বেশ উৎসাহ নিয়ে তার কাছ থেকেই তোমার খোজঁ নিতাম।
তারপর মাতৃভূমি আর পুষ্পের রাজ্য ছেড়ে,
আমার সাহেবের দেশে ভাগ্য গমণ।
তবে, কি জানো পুষ্প?
তোমাকে কখনো ভুলিনি।
এখনো ছাদে তোমাকে শাড়ি শুকোতে দেখি।
বারান্দায় গামছা দিয়ে চুল ঝাড়তে দেখি।
তখনের মত এখনো কিছুই বলতে পারিনা।
তোমাকে ডাকতে পারিনা।
আমার মনের মাঝে নানান যত্নে তৈরি হওয়া এই পুষ্প রাজ্যের কথা।
তুমি কি কখনো জানবে?
পুষ্প, চিঠি কি তুমি পাবে?
©আল ইয়াছা ইরফান।
১/৮/১৭
ছবিঃ গুগল
Comments
Post a Comment